Golden Bangladesh
Eminent People - শহীদ সাবের

Pictureশহীদ সাবের
Nameশহীদ সাবের
DistrictCox's Bazar
ThanaNot set
Address
Phone
Mobile
Email
Website
Eminent Typeগনমাধ্যম
Life Style

৩১ মার্চ, ১৯৭১। কাকডাকা ভোর। ঢাকার রাজপথ প্রকম্পিত করে ছুটছে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক। মাঝে মাঝে গুলির শব্দ, চিত্‍কার- তারপরই নিঃস্তব্ধতা। একসময় কয়েকটি ট্যাঙ্ক ছুটে এল তত্‍কালীন প্রগতিশীল পত্রিকা 'দৈনিক সংবাদ' অফিসের দিকে। এসেই ঠা ঠা ছুড়তে লাগল গুলি। তারপর আগুন। দাউদাউ জ্বলে উঠল। চারদিক থেকে পুড়তে লাগল 'সংবাদ' অফিস। আর তখনো প্রতিদিনকার মতো 'সংবাদ' অফিসের ভেতর ঘুমিয়েছিলেন একজন মানুষ। সেই নিষ্ঠুর আগুনের লেলিহান শিখায় আর সবকিছুর সঙ্গে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান সেই একজন মানুষ, সম্ভাবনাময় একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র, শহীদ সাবের।
একসময়কার দুর্দান্ত মেধাবী ছাত্র, সম্ভাবনাময় সাহিত্যিক, প্রগতিশীল রাজনীতিক, তীক্ষ্ণ বুদ্ধির সাংবাদিক, প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ শহীদ সাবেরের বাস্তব জীবনের কিছু ঘটনা-দুর্ঘটনার কারণে ১৯৫৮ সালের শেষদিক থেকেই শুরু হয় মানসিক বিপর্যয়। খাওয়া-দাওয়া, গোসল, দাঁত মাজা, চুল-দাঁড়ি-নখ কাটা, কিছুই ঠিকমতো করতেন না। পোশাক-পরিচ্ছদেও অপরিচ্ছন্ন হয়ে উঠেছিলেন। লেখালেখিও দিয়েছিলেন কমিয়ে। কারও প্রশ্নের তেমন কোনো জবাব দিতেন না। তাঁর সেই মানসিক বিপর্যয়কালে সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষে রোকনুজ্জামান খান (দাদাভাই) উদ্যোগ নিয়ে তাঁকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তাঁর বন্ধু ফউজুল করিম এবং মন্টু খান তাঁর সঙ্গে গিয়ে তাঁকে পাবনায় হাসপাতালে রেখে আসেন। চিকিত্‍সায় কিছুটা সুস্থ হলেও চিকিত্‍সার ধারাবাহিকতার অভাবে সেই সুস্থতা বজায় থাকেনি। পরে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। ডাস্টবিন থেকে 
 
   
 
 
খাবার তুলে খাওয়া, পেটিকোট, আন্ডারওয়্যার পরে রাস্তায় বের হয়ে পরার মতো কিছু ঘটনাও ঘটেছিল। বেগম সুফিয়া কামাল এবং ওয়াহিদুল হক ও সনজীদা খাতুন তাঁকে পরিচ্ছন্ন জীবনে ফিরিয়ে আনতে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যেয়েও বেশিদিন রাখতে পারেননি।
বংশালের 'সংবাদ' অফিসই হয়ে উঠেছিল সাবেরের শেষ আশ্রয়স্থল। দিনমান উদভ্রান্তের মতো ঘুরতেন। রাতে ঘুমাতে যেতেন 'সংবাদ' অফিসে। মেঝে, বারান্দা, হাতলবিহীন চেয়ার ছিল তাঁর ঘুমের স্থান। সেসময় 'সংবাদ' অফিস থেকে তাঁকে প্রতিদিন দুই টাকা করে দেয়া হতো। প্রেসক্লাবে খাওয়া ফ্রি। কিন্তু খাওয়ার বেলায়ও তিনি ছিলেন অনিয়মিত। একমাত্র সিগারেট খেতেই সবার কাছে হাত পাততেন নির্দ্বিধায়। মানসিকভাবে কিছুটা অস্বাভাবিক হয়ে উঠলেও বুঝতেন সবকিছুই, কথাবার্তায়ও তেমন কোনো অসঙ্গতি ছিল না। তাঁকে নিয়ে পত্রিকায় কেউ কিছু লিখলে তার প্রতিবাদে বলতেন- 'আমি কি পণ্য? আমার কথা লিখছেন কেন?' তিনি পরিবার-পরিজন থেকেও পাননি যথাযথ ভালোবাসা ও সহমর্মিতা। ভালো হবার সম্ভাবনা থাকলেও সুচিকিত্‍সা ও পরিচর্যার অভাবে তাঁর আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। জন্ম-লগ্নেই যেন সূচিত হয়েছিল এই পরিণাম-সংকেত!
তখন ১৯৩০ সাল। বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের মতোই উত্তাল চট্টগ্রাম। একদিকে আন্দোলনের প্লাবনে রাজপথে নেমেছে সারা ভারতের মুক্তিকামী জনতা। অন্যদিকে সমুদ্রের উত্তুঙ্গ আবেগ বুকে নিয়ে সমুদ্রকন্যা চট্টলার স্বাধীনতাকামী সন্তানেরা মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে গোপনে আয়োজন করছেন সশস্ত্র বিপ্লবী অভ্যুত্থানের। দুটো ঘটনার মধ্যেই যোগসূত্র ছিল। সবারই চোখে জ্বলজ্বল করছিল কেবল একটিই স্বপ্ন- পরাধীন ভারতের তথা বাংলার মুক্তি, স্বাধীনতা। আর তারই ফলশ্রুতিতে ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামের বুকে সূর্যসেনের নেতৃত্বে ইতিহাসের মহাযজ্ঞের এক ছোট অধ্যায় রচিত হয়। ঘটনা এগিয়ে যায়। আকাশে-বাতাসে মিশে থাকে বিস্ফোরণের স্ফুলিঙ্গ। আর সেই স্ফুলিঙ্গের ছোট্ট একটি কণা বুকে নিয়ে নানার বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁর অখ্যাত গ্রাম সোনাপুকুরে ১৯৩০ সালের ১৮ ডিসেম্বর, শীতের রাত্রিতে, জন্ম নেয় একটি শিশু। নাম তাঁর একেএম শহীদুল্লাহ, সংক্ষেপে শহীদ সাবের। ঈদগাঁর গ্রামীণ আবহের মধ্যে মায়ের ঘুমপাড়ানি গানের কন্ঠে ভেসে আসে তখন বুলেটের শব্দ। বারুদের গন্ধ। তিরিশের নানা ঘটনার চড়াই-উত্‍রাইয়ের মধ্যে তাঁর জন্মলগ্ন তাই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
সাবেরের পূর্বপুরুষেরা ছিল এককালে পর্তুগিজ-অধ্যুষিত দিয়াং এলাকার অধিবাসী। পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলার সীমান্তে অবস্থিত দিয়াং। দাদা আসাদ আলী চট্টগ্রাম শহরতলীর চন্দনপুরার জনৈক ইংরেজ সাহেবের কাছ থেকে একখণ্ড জমি কিনে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করেন। পরে সাবেরের বাবা সালামতউল্লাহ হন বাড়িটির অধিবাসী। অন্যদিকে নানা হামিদুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন ঈদগাঁর জমিদার। হামিদুল্লাহ চৌধুরীর একমাত্র কন্যা শফিকা খাতুনের সঙ্গে সালামতউল্লাহর বিয়ে হয় পারিবারিকভাবেই। তাঁদের বিয়ে পরবর্তী দাম্পত্যজীবনে প্রথমে শহীদ সাবের এবং পাঁচ বছর পর মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, ডাকনাম পিয়ারু, আসেন পৃথিবীর আলোতে। সালামতউল্লাহকে সরকারী চাকরি সূত্রে ঘুরে বেড়াতে হত বিভিন্ন জায়গায়। কখনো দার্জিলিং, কখনো কলকাতা। ফলে সাবের বড় হতে লাগল নানা বাড়িতেই মায়ের স্নেহছায়ায়।
ছোটবেলা থেকেই শান্ত-স্বভাবের ছিলেন তিনি। দামাল ছেলের দুরন্তপনা তাঁর মধ্যে ছিল না। ছেলেবেলায় ঘুড়ি, লাটাই, গুলতি আর ডাঙ্গুলি খেলতেন। তবে এইসব খেলার বাইরেও খুঁজে পেতে চাইতেন অন্যকিছু। ঈদগাঁর শান্ত-প্রকৃতির মতো একটা স্থিরতা ছিল তাঁর মজ্জাগত। আর সেইসাথে আবেগের বাহুল্য এবং ভাবপ্রবণতাই ছিল তাঁর চরিত্রের একটি বৈশিষ্ট।
ঈদগাঁর প্রাইমারি স্কুলে তাঁর শিক্ষা জীবনের শুরু। নানাবাড়ির পাশেই ছিল মায়ের নিজস্ব একটি বাড়ি। সেই বাড়িতেই শৈশবের মনোরম দিনগুলো কাটিয়েছেন সাবের। সকালে কোনোদিন ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠতে পারতেন না। একজন মাস্টার ছিল বাড়ির ছেলে-মেয়েদের পড়াবার জন্য। সাবেরকে উঠাবার জন্য তিনি নানারকম ফন্দি করতেন। বলতেন, আজ ভোরবেলা যে সবার আগে উঠতে পারবে সে একটা মজার জিনিস পাবে। লজেন্স, বিস্কুট, মিষ্টি এমনি ধরনের ছোটখাটো জিনিস তিনি ওদের দিতেন। কিন্তু এইসব প্রলোভনেও কাজ হতো না। আর এজন্যে তাঁর কোনো ক্ষোভ বা লজ্জা ছিল না। তিনি ছিলেন মেধাবী ছাত্র। ঘুম থেকে পরে উঠলেও পড়ালেখায় কেউ তাঁকে ছাড়িয়ে যেতে পারত না।
ঈদগাঁর প্রাইমারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর সাবের চলে যান কলকাতায়, বাবার নতুন সংসারে। ইতিমধ্যে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জমিদারী-রক্তের বাহক শফিকা খাতুনের সঙ্গে সাধারণ ঘরের সন্তান সালামতউল্লাহ'র স্থানিক দূরত্বে বসবাসের ফলে মানসিক দূরত্বও কিছুটা তৈরি হয়েছিল। সালামতউল্লাহ বেশ ক'বার শফিকা খাতুনকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শফিকা খাতুনের সাফ জবাব, তিনি ঈদগাঁ ছেড়ে কোথাও যাবেন না। ফলে, ১৯৩৭ সালে সালামতউল্লাহ আবার বিয়ে করেন, নূরুন্নাহার বেগমকে। সালামতউল্লাহ সেসময় থাকতেন কলকাতায়। সাবেরের বয়স তখন ৭। বাবার দ্বিতীয় বিয়ে তাঁর জীবনের রং বদলে দিল। পারিবারিক দিক থেকে যে জীবনটা গড়ে উঠতে পারত প্রশস্ত রাজপথের মতো সোজা সহজ, সেটা হলো আঁকাবাঁকা।
কলকাতায় তাঁর দিনগুলো বয়ে যেতে লাগল ঝড়ো হাওয়ার মতো। সেখানে ভর্তি হলেন হেয়ার স্কুলে। এই স্কুলে তিনি ছিলেন সেকেন্ড বয়। স্কুলজীবন থেকেই সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক প্রভৃতি সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে যান। পার্ক সার্কাসের বালহক্কাক লেনে ছিল 'ছোটদের আসর' ও 'কিশোর সংঘ' নামে দুটি সংগঠন। 'ছোটদের আসর'-এর একটি লাইব্রেরি ছিল কর্নেল সুরেশ বিশ্বাস রোডে। সাবের ছিলেন তার লাইব্রেরিয়ান। এই লাইব্রেরিতে 'ছোটদের রাজনীতি', 'ছোটদের অর্থনীতি' প্রভৃতি বইও ছিল তখন। সময়টা ১৯৪০-এর পরবর্তীকাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কা এসে লেগেছে কলকাতাতেও। এই যুদ্ধের পরিবেশেই গড়ে উঠতে থাকে কিশোর সাবেরের মন-মানসিকতা এবং নির্দিষ্ট খাতে বইতে শুরু করে তাঁর রাজনীতি-সচেতনতা। অপর প্রতিষ্ঠান 'কিশোর সংঘ'ও ছিল পার্ক সার্কাস এলাকার কিশোরদের প্রাণ। এই সংঘের উদ্যোগে প্রায়ই বিতর্ক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা হতো। এ সংঘ 'ছন্দশিখা' নামে হাতে লেখা একটি পত্রিকাও বের করত। সেটি সম্পাদনা করতেন শহীদ সাবের। সাহিত্যিক আতাহার আহমদ এ সংঘের সাথে যুক্ত ছিলেন। ঔপন্যাসিক রশীদ করিম ছিলেন এ সংঘের উপদেষ্টা। এরকম সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশের মধ্যে কিশোর-সাহিত্যিক শহীদ সাবেরের বিকাশ। 'ছন্দশিখা' পত্রিকার প্রথম সংখ্যার প্রচ্ছদপট এঁকেছিলেন শিল্পী জয়নুল আবেদিন।
শহীদ সাবেরের লেখা বড় কোনো কাগজে প্রথম প্রকাশিত হয় কলকাতা থেকে প্রকাশিত 'দৈনিক ইত্তেহাদ' পত্রিকায়। সে সময় 'দৈনিক ইত্তেহাদ' সম্পাদনা করতেন আবুল মনসুর আহমদ। সাহিত্য বিভাগ দেখতেন কবি আহসান হাবীব। লেখা প্রকাশের সূত্রে ওই পত্রিকা অফিসেই আহসান হাবীবের সঙ্গে সাবেরের প্রথম পরিচয়। সাবের তখন স্কুলের ছাত্র। পরে 'দৈনিক ইত্তেহাদে' তাঁর একটি গল্পও প্রকাশিত হয়েছিল। তখনকার সাবের সম্পর্কে আহসান হাবীবের মন্তব্য ছিল, 'এমন সপ্রতিভ ছেলে আমার চোখে পড়েনি। বয়সের তুলনায় তাঁর মানসিক পরিপক্কতা ছিল অনেক বেশি'।
কলকাতার শিক্ষাজীবনে অন্যদের মতো কিশোর শহীদ সাবের স্বাধীনতায় ভরা, মুক্ত নিজস্ব জগৎ পাননি। নিজের মা বেঁচে থাকা সত্ত্বেও তাঁকে ছেড়ে বহুদূরে আছেন। সত্‍মায়ের কাছে থাকতে বাধ্য হওয়ায় পারিবারিক জীবনের সুস্থতা, বাবা-মায়ের স্নেহময় পরিবেষ্টন থেকে তিনি হয়েছেন বঞ্চিত। সেজন্যে তাঁর মানসিক বিকাশও ব্যাহত হয়। কিশোর সাবের প্রায়ই বিষন্ন হয়ে পড়তেন, পোশাক-পরিচ্ছদের প্রতি ছিলেন উদাসীন। কিশোর বয়স থেকেই নোংরা-ময়লা পোশাক পরে নিজের প্রতিই যেন প্রকাশ করতেন চরম অশ্রদ্ধার ভাব।
অন্য কিশোরদের মতো খেলাধুলারও সুযোগ পাননি তিনি। বিকেলে খেলার সময়টাতে ছোটবোনকে কোলে রাখতে হতো। পাড়ার রকে বোনকে পাশে বসিয়ে রেখে কখনও কখনও ক্যারাম খেলতে বসতেন, তবে তা কিছুতেই শেষ করতে পারতেন না। কেননা, খেলা শুরু হতেই বোনটি কাঁদতে শুরু করত, আর তখনই খেলা ফেলে উঠে পড়তে হতো তাঁকে। সম্ভবত এই পারিবারিক পরিবেশই তাঁকে ঠেলে দেয় অস্বাভাবিকতার পথে।
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হলে সাবেররা ফিরে আসেন পূর্ব বাংলার নিজ জেলায়। এবার ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে এবং ১৯৪৯ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ঐ একই সময়ে মুকুল ফৌজ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে একটি ভিন্ন কন্ঠস্বর হিসেবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন চট্টগ্রামের সকলের। তাঁর লেখার ক্ষমতা, অনায়াস বক্তৃতার ক্ষমতা এবং রাজনৈতিক সচেতনতা ছিল জনপ্রিয়তার প্রথম সোপান। মুকুল ফৌজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাটকে অভিনয়ও করেছেন। ১৯৪৯ সালের শেষের দিকে মুকুল ফৌজ থেকে বেরিয়ে আসেন। তখন তিনি চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র। আর তখনই কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্রসংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত হন এবং সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গেও যান জড়িয়ে। পাকিস্তানে সেইসময় চলছে কমিউনিস্টদের ওপর দমন-পীড়ন-নির্যাতন। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীদের ওপর যখন-তখন হামলা চালাচ্ছিল। ১৯৫০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ছাত্র ফেডারেশনের এক সমাবেশে বক্তৃতা করছিলেন সাবের। ওই অবস্থায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা না দিয়ে বন্দি সাবেরকে প্রথমে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম জেলে, পরে আতঙ্কের জেল বলে খ্যাত রাজশাহী জেলে। সেখানেই আরেক রাজবন্দি সরদার ফজলুল করিমের সঙ্গে হয় তাঁর জানাশোনা ও ঘনিষ্ঠতা।
রাজশাহী জেলের সর্বকনিষ্ঠ রাজবন্দি ছিলেন সাবের। সবাই তাঁকে স্নেহ করতেন। সহ্য করতেন এই তরুণের নানা আবদার-উপদ্রব হাসিমুখে। রাজশাহী জেল থেকে পরীক্ষা দিয়েই ১৯৫১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। সেসময় তাঁর সাহিত্যচর্চাও ছিল অব্যাহত। জেলজীবনের কাহিনী নিয়ে তিনি লিখলেন 'আরেক দুনিয়া থেকে'। লেখাটি জেল থেকে গোপনে পাচার করে কলকাতার 'নতুন সাহিত্য' পত্রিকায় পাঠানো হলে ছাপা হয় চৈত্র ১৩৫৭ সংখ্যায়। তখন লেখাটি বেশ সাড়া ফেলেছিল। কথাশিল্পী মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখাটি পড়ে পত্রিকার সম্পাদককে চিঠি লিখে এই নতুন প্রতিভাকে স্বাগত জানান। নিরাপত্তা বন্দি বলে স্বনামে লেখা ছাপানো সম্ভব ছিল না। তাই এটি ছাপা হয়েছিল জামিল হোসেন ছদ্মনামে। এরপর তাঁকে আনা হয় ঢাকার সেন্ট্রাল জেলে। বাবা সালামতউল্লাহ বেশ ক'বার বন্ড দিয়ে ছেলের মুক্তির উদ্যোগ নেন কিন্তু সাবের এভাবে মুক্ত হতে রাজি হননি। যুক্তফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজবন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়। সাবেরও মুক্তি পান। কিন্তু ইতিমধ্যে বিনা বিচারে জীবনের মূল্যবান চারটি বছর হারিয়ে গেল জেলের অন্ধকারে।
১৯৫৪ সালে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আজিমপুর কলোনিতে বাবার সংসারে চলে আসেন। বাবা সালামতউল্লাহ সেসময় চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। ফলে সাংসারিক দায়-দায়িত্বের চাপে পড়ে শহীদ সাবের আজিমপুর ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুলে যোগ দেন সহকারী শিক্ষক পদে। সেখানে কথাশিল্পী মাহমুদুল হক ছিলেন তাঁর ছাত্র। ওই সময়েই জগন্নাথ কলেজের নৈশ শাখায় স্নাতক ক্লাস ভর্তি হন তিনি। ১৯৫৫ সালে স্নাতক পাশ করে যোগ দেন সহকারী সম্পাদক হিসেবে 'দৈনিক সংবাদ'-এ। একই সঙ্গে 'সংবাদ'-এর 'সাহিত্য পাতা'-রও সম্পাদনা করতেন তিনি। তখন তাঁর লিখিত সম্পাদকীয় খুবই আকর্ষণীয় হতো- তাতে প্রকাশ পেত তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও শাণিত মননের দীপ্তি। তাতে উপস্থাপনা ও প্রকাশভঙ্গির মুন্সিয়ানাও ছিল লক্ষণীয়।
সংবাদে কর্মরত থাকা অবস্থাতেই সাবের প্রথমে সেন্ট্রাল সুপারিয়র সার্ভিসের (সিএসএস) অন্তর্গত সিএসপি পরীক্ষায় বসেন; লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায়ও হন উত্তীর্ণ। চোখের সমস্যার অজুহাতে নিশ্চিত সরকারী চাকরি থেকে তাঁকে করা হয় বঞ্চিত। পরে ফেডারেল ইনফরমেশন সার্ভিসের পরীক্ষা দিয়ে পুরো পাকিস্তানে প্রথম স্থান অধিকার করেন। কিন্তু তিনি ছিলেন জেলখাটা কমিউনিস্ট, পুলিশ-রিপোর্ট ছিল না সন্তোষজনক। এ কারণে তাঁকে নিয়োগপত্র দেয়া হয়নি। পরে তখনকার পূর্ববঙ্গের প্রাদেশিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের সঙ্গে সাক্ষাত্‍ করে বিষয়টি বিস্তারিত জানালে তিনি এ ব্যাপারে ওভাররুল করে, নিয়োগপত্র প্রদানের সরকারী নির্দেশের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পরদিন অর্থাত্‍ ১৯৫৮ সালের ৮ অক্টোবর তিনি নির্দেশ দেয়ার পূর্বেই, সেই রাতেই মার্শাল ল' জারি করে জেনারেল আইয়ুব খান দখল করেন ক্ষমতা। তাতে সাবেরের পরিবারের আকাঙ্ক্ষা এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রের গণতন্ত্র একই সঙ্গে ভেস্তে যায়।
শহীদ সাবেরের লক্ষ্য, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি ছিল সমন্বয়হীন, যা তাঁকে হতাশ করে তুলেছিল। রাজনৈতিক ও পারিবারিক জীবনের টানাপোড়েনের মধ্যে সম্ভবত সংসার জীবনের আকর্ষণেই এক জমিদারকন্যার সঙ্গে গড়ে উঠেছিল তাঁর প্রেমের সম্পর্ক। 'সংবাদ' পত্রিকার অফিসের টেলিফোনে কখনও কখনও একটি অপূর্ব সুরেলা নারীকন্ঠ ভেসে আসত, কখনো বা আসত একটি নীলখামের চিঠি। অথচ সে প্রেমও টেকেনি। সেই জমিদারকন্যার বিয়ে হয়ে যায় অন্যত্র। আর হতাশা সাবেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলে চারদিক থেকে। ১৯৫৯ সালের প্রথম দিকে ময়মনসিংহে তাঁর মামাতো বোনের বাড়িতে নিভৃতে রাতের আঁধারে পুড়িয়ে ফেলেন নীল কাগজে লেখা প্রেমিকার সেই প্রেমপত্রগুলো। এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, 'বাজে জিনিস পুড়িয়ে ফেলাই ভালো।'
শহীদ সাবেরের সাহিত্যচর্চাকাল খুব দীর্ঘ নয়। তাঁর সাহিত্যজীবনকে তিনটি পর্বে ভাগ করা চলে। কৈশোর থেকে জেলজীবনের পূর্ব পর্যন্ত তাঁর প্রস্তুতি পর্ব, জেলজীবন থেকে মানসিক সুস্থতা হারানোর পূর্ব পর্যন্ত দ্বিতীয় বা সৃষ্টিশীল পর্ব এবং অপ্রকৃতিস্থ থাকায় গোটা সময়টা তৃতীয় বা সমাপ্তি পর্ব। প্রস্তুতি পর্বে তাঁর কিছু গল্প-কবিতা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ পায়। কিন্তু পরবর্তীতে তার সবগুলোর সন্ধান পাওয়া যায়নি। কলকাতায় 'ছন্দশিখা' নামে কিশোর সংঘের হাতে লেখা পত্রিকাটি তিনি কেবল সম্পাদনাই করতেন না, নিজের লেখাও নিশ্চয় ছিল। 'দৈনিক ইত্তেহাদে' একটি গল্প ছাপা হয়। চট্টগ্রামে স্কুল-কলেজে পড়ার সময়ও কিছু লেখা ছাপা হওয়ার কথা, কিন্তু এগুলোরও সন্ধান মেলেনি। চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত 'সীমান্ত' নামের একটি পত্রিকার প্রথম বর্ষ ষষ্ঠ সংখ্যায় ছাপা হয় তাঁর 'আবেগ' গল্পটি।
দ্বিতীয় পর্ব বা সৃষ্টিশীল পর্বে সাবের আত্মপ্রকাশ করেন প্রধানত একজন প্রতিশ্রুতিশীল গল্পকার, অনুবাদক ও কবি হিসেবে। ১৯৫০ সালে জেলে বসে জেলের বন্দিজীবন নিয়ে 'আরেক দুনিয়া থেকে' নামের যে গ্রন্থটি লিখেন তা দিনলিপি বা রোজনামচা শ্রেণীর রচনা হলেও পাওয়া যায় লেখকের মননশীলতা ও বাকবৈদগ্ধের পরিচয়। অথচ তখন তিনি উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র মাত্র। এছাড়াও এ পর্বে লিখেছেন ছোটগল্পের বই 'এক টুকরো মেঘ' (১৯৫৫) ও কিশোরদের উপযোগী গল্প 'ক্ষুদে গোয়েন্দাদের অভিযান' (১৯৫৮)। অনুবাদ করেছেন পুশকিনের 'ইস্কাপনের বিবি', 'গোগলের পাগলের ডায়েরি' ক্যাথারিন ওয়েন্স পিয়ারের 'কালো মেয়ের স্বপ'ন'। এই তিনটি অনুবাদ নিয়ে বেরিয়েছিল গ্রন্থ 'কালো মেয়ের স্বপ্ন' (১৯৫৮)।
তৃতীয় বা শেষ পর্বে তিনি মূলত কবিতা লিখেছেন। কিছু গানও লিখেছিলেন। সেগুলো অনুষ্ঠানে গাওয়াও হয়েছিল। তখন মানসিক বৈকল্যে ভুগছিলেন। যখনই একটু সুস্থবোধ করেছেন তখনই কবিতা লিখেছেন। অসংখ্য কবিতা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ছাপাও হয়েছে, তবে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি। ১৯৭১ সালে 'সংবাদ' ও 'ইত্তেফাক' অফিস ধ্বংস হওয়ায় শহীদ সাবেরের অনেক কবিতাই আর পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমী থেকে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সম্পাদনায় 'শহীদ সাবেরের রচনাবলি' প্রকাশিত হয়।
শহীদ সাবেরের লেখায় জীবনের বস্তুনিষ্ঠ সত্য, রূঢ় জীবন-বাস্তবতা, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের অনুদ্ঘাটিত সত্য, উপেক্ষিতের ও শোষিত-বঞ্চিতের মর্মবেদনা অনায়াসে উঠে এসেছে। তাঁর লালিত জীবনাদর্শ তাতে সার্থকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তাতে লক্ষ করা যায় ঐতিহাসিক ও দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদী দৃষ্টির ছায়াপাত। এমনকি বামপন্থি রাজনৈতিক মতবাদও অনেকাংশে প্রতিফলিত হয়েছে সাবেরের সাহিত্যকর্মে। তাঁর গদ্য-ভাষাও খুবই নির্মেদ, নির্ভার। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭২ সালে (মরণোত্তর) বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শহীদ সাবেরকে যাপন করতে হয়েছে এক ট্র্যাজিক জীবন। যে জীবনে নেই কোনো স্বস্তিময় প্রহর, নিশ্চিন্ত পথচলা। পদে পদে সে জীবনে এসেছে বঞ্চনা ও ব্যর্থতা। সমাজ, সংসার ও রাষ্ট্র তাঁকে দিতে পারেনি কোনো আলোকিত পথের ঠিকানা, কেবলি দিয়েছে অন্ধকারের দিকে ঠেলে। এতে হয়ত তিনি হয়েছেন বিস্মিত ও মর্মাহত। হয়ত তাঁর 'আবেগ' গল্পের কেরাণীর মতো শেষ জীবনে তাঁরও মনে প্রশ্ন জেগেছিল, 'কেন আমার জন্ম হলো? কেন এসেছিলুম এই পৃথিবীতে?' এ প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন কি তিনি, নাকি এখনও খুঁজে ফিরছেন, কখনো ঈদগাঁ, কখনো কলকাতা, কখনো ঢাকার বংশাল, গুলিস্তান বা অন্যকোথাও!
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি :
জন্ম :
১৯৩০ সালের ১৮ ডিসেম্বর। কক্সবাজারের অন্তর্গত ঈদগাঁয় নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ সাবের। পুরোনাম একেএম শহীদুল্লাহ। বাবা সালামতউল্লাহ ও মা শফিকা খাতুনের প্রথম সন্তান তিনি। নানা হামিদুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন ঈদগাঁর জমিদার। দাদা আসাদ আলীর সূত্রে বাবা সালামতউল্লাহর বাড়ি ছিল চট্টগ্রামের শহরতলী চন্দনপুরায়।
পরিবার-পরিজন :
জীবনে প্রেম এসেছিল কিন্তু বিয়ে হয়ে উঠেনি। একমাত্র সহোদর ভাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ (পিয়ারু)। পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি শেষে অবসর নিয়ে বর্তমানে বসবাস করছেন চট্টগ্রামে। এছাড়াও আছে সত্‍মা নূরুন্নাহার বেগমের চার ছেলে ও তিন মেয়ে। বাবা-মা দু'জনেই গত হয়েছেন, অনেকদিন আগে। বাবা, ১৯৬৮ সালে; আর মা, ১৯৭৪ সালে।
পড়াশুনা :
ঈদগাঁর প্রাইমারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা পর ১৯৩৭ সালে কলকাতায় হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন। সেই স্কুলের সেকেন্ড বয় ছিলেন তিনি। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হলে আবার পূর্ববাংলায় তথা বাংলাদেশে। এবার চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে। সেখান থেকে ১৯৪৯ সালে মেট্রিক পাস করেন। আই.এ. ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজে। এসময় তিনি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যান। ১৯৫০ সালে গ্রেফতার হন কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্রসংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের সমাবেশ থেকে। প্রথমে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম জেলে, পরে রাজশাহী জেলে। রাজশাহী জেলে বসেই আই.এ. পাস করেন, ১৯৫১ সালে। চার বছর জেল খেটে বের হন, ১৯৫৪ সালে। এবার বি.এ. ভর্তি হন ঢাকার জগন্নাথ কলেজের নৈশ বিভাগে এবং ১৯৫৫ সালে বি.এ. পাস করেন।
গ্রন্থ :
তাঁর গ্রন্থ খুব বেশি নয়। দিনলিপি জাতীয় রচনা 'আরেক দুনিয়া থেকে' (১৯৫৭)। ছোটগল্পের বই 'এক টুকরো মেঘ' (১৯৫৫) ও কিশোরদের উপযোগী গল্প 'ক্ষুদে গোয়েন্দাদের অভিযান' (১৯৫৮)। অনুবাদ, পুশকিনের 'ইস্কাপনে বিবি', 'গোগলের পাগলের ডায়েরি' ক্যাথারিন ওয়েন্স পিয়ারের 'কালো মেয়ের স্বপ্ন'। তিনটি মিলে বের হয় 'কালো মেয়ের স্বপ্ন' (১৯৫৮)। অসংখ্য কবিতাও লিখেছেন, তবে জীবদ্দশায় গ্রন্থাকারে বের হয়নি। সেলিনা হোসেনের সম্পাদনায় ১৯৮১ সালে 'শহীদ সাবেরের রচনাবলি' প্রকাশিত হয় বাংলা একাডেমী থেকে।
কর্মজীবন :
১৯৫৪ সালে আজিমপুর ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুলে সহকারী শিক্ষকের পদে চাকরি করেন এক বছর। পরে 'দৈনিক সংবাদে' সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন, ১৯৫৫ সালে। সেখানে ৫৮/৫৯ সাল পর্যন্ত। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত যদিও 'সংবাদ' অফিসেই অবস্থান করতেন, কিন্তু ৫৯ সালের দিকে তাঁর মানসিক ভারসাম্য হারাতে থাকায় পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্মে ছিলেন না।
পুরস্কার :
সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭২ সালে (মরণোত্তর) বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।
মৃত্যু :
১৯৭১-এর ৩১ মার্চ ভোরে পাকিস্তানী হানাদাররা 'দৈনিক সংবাদ' অফিসে আগুন দিলে সংবাদের স্থায়ী বাসিন্দা ঘুমন্ত শহীদ সাবের সেই আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান।  
 

তথ্যসূত্র:www.gunijan.org.bd
 
  

Rationale
UploaderRaihan Ahamed